কুড়িগ্রামের উলিপুরে দায়সারা ভাবে পালিত হয়েছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪। “শিশু বান্ধব শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী থাকলেও দায়সারা ভাবে কর্মসূচী পালন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ যথাযথ ভাবে উদযাপন করার লক্ষে মাঠ পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষার সকল দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয়ে সমূহে ৩ দিন ব্যাপী (২৬ থেকে ২৮ মে) বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করার নির্দেশনা রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ২৬ মে উদ্বোধনী দিনে উপজেলা রির্সোস সেন্টারে অনুষ্ঠান ও উপজেলার দপ্তর সমূহে ব্যানার-পোস্টার দিয়ে সজ্জিতকরন করতে হবে। দ্বিতীয় দিনে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও বিদ্যুৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা সভা। তৃতীয় দিনে শিক্ষার্থীদের হাতের সুন্দর লেখা, ”চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও শিক্ষামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ কর্মসূচী সমাপ্ত হওয়ার কথা। এছাড়া উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে তিনদিন ব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মসূচী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং ঝড়েপড়া রোধকল্পে অভিভাবক সমাবেশের আয়োজনের নিদের্শনা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের প্রথম দিনে উপজেলা রির্সোস সেন্টারের সম্মুখে ব্যানার সাটিয়ে শুধুমাত্র ফটোসেশন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার দপ্তর গুলোতে ব্যানার-পোস্টার লাগানোর কথা থাকলেও শুধু মাত্র শিক্ষা অফিসে কয়েকটি পোস্টার লাগানো হয়েছে। উপজেলা চত্বরের কোথাও কোন পোস্টার খুঁজে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় দিনে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনা সভা করা হলেও সেখানে কোনো বিদ্যুৎসাহী ব্যক্তি ছিল না। তৃতীয় দিনে শিক্ষামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। শুধুমাত্র উপজেলা সদরে উলিপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ”চিত্রাঙ্কন ও সুন্দর হাতের লেখার প্রতিযোগিতায় ১২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্লাষ্টিকের টিফিন বাটি পুরুস্কার হিসাবে বিতরন করা হয়েছে। এছাড়া একটি ব্যানার দিয়েই দায়সারা ভাবে তিন দিনের কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী- অভিভাবক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ২শ ৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে কোন কর্মসূচী পালন করা হয়নি। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, মোবাইল ফোনে প্রধান শিক্ষকদের হোয়ার্টস অ্যাপ গ্রুপে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে শিক্ষা সপ্তাহের বার্তা পোষ্ট করা হয়। কিন্তু কোন তদারকিসহ অনুষ্ঠানের খোঁজ খবর নেয়া প্রয়োজন মনে করেনি উপজেলা শিক্ষা অফিস। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দায় এড়িয়ে চলেছেন বলে জানা গেছে। সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকালে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের প্রচারনার পোস্টারের বান্ডিল শিক্ষা অফিসের একটি কক্ষে টেবিলের উপর পরে রয়ছে।এছাড়া শিক্ষা অফিসের ভবন জুড়ে মাত্র ৫টি পোস্টার লাগানো আছে। উপজেলার সঃ প্রাঃ বিদ্যালয় গুলোতে সরবরাহ করা হয়নি কোন পোস্টার। উপজেলা চত্বরেও নেই কোন শিক্ষা সপ্তাহের পোস্টার। সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফরহাদ হোসেন খন্দকার বলেন, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে আমাদের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল। শিক্ষা সপ্তাহের পোস্টার ও ব্যানার অফিসে লাগানো হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোকে কর্মসূচী পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সঠিক ভাবে কর্মসূচী পালন করেছে কি না তা সঠিক ভাবে তদারকি করা সম্ভব হয়নি। চিত্রাঙ্কন ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় ১২ জন বিজয়ী শিক্ষার্থীর পুরুস্কার বিতরন প্লাষ্টিকের টিফিন বাটির কথা তিনি স্বীকার করেন। এ বিষয়ে মুঠোফোনে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমির হোসেনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান,আমি ব্যাক আফিসে একটি মিটিংয়ে আছি কথা বললে সন্ধ্যায় অফিসে দেখা করেন কথা বলবো।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ